দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অভিযান পরিচালনা করেছে। বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চলে এই অভিযান। দিনাজপুর জেলা দুদকের সহকারী পরিচালক মো. ইসমাইল হোসেনের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে উঠে আসে একাধিক অস্বচ্ছ কর্মকাণ্ড ও অনিয়মের চিত্র।
দুদকের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, হাসপাতালে বহির্বিভাগের ৩ টাকার সরকারি ফি-এর জায়গায় ৫ টাকা আদায়, প্যাথলজি ও এক্স-রে বিভাগের টেস্ট ফি আত্মসাৎ, রোগীদের নিম্নমানের খাবার সরবরাহ, এবং ঠিকাদারের পক্ষ থেকে ওজনে কম মাংস ও মাছ সরবরাহের মতো একাধিক অভিযোগের সত্যতা মিলেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়:
-
বহির্বিভাগে অতিরিক্ত ফি আদায়।
-
এক্স-রে বিভাগের মনোরঞ্জন নামক কর্মী রিপোর্ট বাবদ টাকা আদায় করে রেজিস্টারে না লিখে আত্মসাৎ করছেন।
-
রোগীদের জন্য বরাদ্দ দেশি মুরগির পরিবর্তে ব্রয়লার সরবরাহ।
-
চাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের মোটা চাল।
-
খসড়া কাগজে টেস্ট ফি-এর তালিকা তৈরি করে রেজিস্টারে মাত্র কয়েকজনের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।
দুদক কর্মকর্তা মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, “সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে এ অভিযান চালানো হয়েছে। এক্স-রে ও হিসাব বিভাগের কিছু অসঙ্গতির প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছি। রোগীদের জন্য প্রতিদিন ১৭৫ টাকা বরাদ্দ থাকলেও খাবারের মান অত্যন্ত নিম্নমানের। এসব অনিয়মের প্রমাণস্বরূপ নথিপত্র জব্দ করে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন তৈরি করে কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হবে।”
তিনি আরও বলেন, “উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কমিশন নির্দেশনা দিলে, আইনানুগ সব পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
এদিকে, বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আফরোজ লুনা জানান, “দুদক কর্মকর্তাদের পর্যবেক্ষণ ও সুপারিশ সিভিল সার্জন কার্যালয়ে লিখিতভাবে জানানো হবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।”
স্থানীয়রা মনে করছেন, এ ধরনের অভিযানের মাধ্যমে অন্তত স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতির চিত্র কিছুটা হলেও উন্মোচিত হচ্ছে। তবে তারা চান, এসব অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ হোক।