বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, বিএনপি একটি রাজনৈতিক দল এবং তাদের সঙ্গে জামায়াতের বন্ধুত্বপূর্ণ ও সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। তবে জোট গঠনের মতো প্রক্রিয়া যখন আসবে, তখনই দল এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
সম্প্রতি রাজধানীর মগবাজারে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন। প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী সেই আলাপে দেশের চলমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন, দলীয় প্রস্তুতি, সংস্কার, নিবন্ধন সংক্রান্ত মামলা, এবং ইসলামী জোট গঠনের অগ্রগতিসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে সরাসরি কথা বলেন তিনি।
পরওয়ার বলেন, “জামায়াত ৩০০ আসনে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে প্রস্তুতি নিচ্ছে। সম্ভাব্য প্রার্থীদের মাঠে সক্রিয় করা হয়েছে—তারা গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছে এবং জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলছে।”
তিনি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে জনগণ জামায়াতের প্রতি তাদের সমর্থন জানাবে বলে আশাবাদী। নিবন্ধন সংক্রান্ত মামলাটি এখনো আদালতে বিচারাধীন রয়েছে এবং তিনি ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেন।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে লন্ডনে বৈঠকের গুঞ্জন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এটা কেবল একটি সৌজন্য সাক্ষাৎ ছিল। রাজনৈতিক কোনো আলোচনা হয়নি।” তিনি উল্লেখ করেন, “খালেদা জিয়া যেমন রাজনৈতিক সহকর্মী, তেমনই তিনি এখন একজন মজলুম ও অসুস্থ ব্যক্তি। তাকে দেখতে যাওয়া মানবিক দায়িত্ব।”
ইসলামী দলগুলোর মধ্যে নির্বাচন ইস্যুতে সমঝোতার বিষয়ে আশাবাদ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “অগ্রগতি সন্তোষজনক। সময়মতো একটি কার্যকর জোট গঠন সম্ভব হবে।”
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করা প্রসঙ্গে পরওয়ার বলেন, “এই সিদ্ধান্ত নেওয়া সরকারের কাজ। জনগণের প্রত্যাশা বিবেচনায় নিলেই সরকার সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।”
পরবর্তী নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন “সুষ্ঠু ও নির্ভয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগের নিশ্চয়তা”। তিনি বলেন, “কালো টাকা ও পেশিশক্তির ভয় থেকে মুক্ত থেকে যেন মানুষ তাদের মত অনুযায়ী ভোট দিতে পারে, সেটাই দেশের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। একইসঙ্গে জামায়াতের জন্য চ্যালেঞ্জ হলো, জনগণ যদি দায়িত্ব দেয়, সেই প্রত্যাশানুযায়ী রাষ্ট্র গঠন করা।”