বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা সদর, সান্তাহার পৌর শহরে প্রতিবছরের ন্যায় শহরের বিভিন্ন এলাকায় শজনে আবাদ ভাল হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস ও চাষীরা শজনে বিক্রি করে লাভবান হবেন বলে আশা করছে। সরজমিনে জানা গেছে, আদমদীঘি, সান্তাহার পৌর শহরের ইয়ার্ড কলোনী, সান্তাহার ষ্টেশন রোডে,সাহেব পাড়া, রথবাড়ি,লকুকলোনীসহ বিভিন্ন রেলওয়ের পতিত জমিতে এবার ব্যাপক শজনে আবাদ হয়েছে।
এই গাছের বৈশিষ্টই হচ্ছে ফল শেষ হলে কাটা ডাল মাটিতে পুতে দিলেই সেখান থেকে বিশাল গাছে পরিনত হয় এবং ব্যাপক ফলন হয়। কোন প্রকার সার,পানি প্রয়োগ ছাড়াই এই গাছ হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে আদমদীঘির মাটি শজনে চাষের জন্য উপযোগী। চাষিদের কাছ থেকে ব্যাবসায়ীরা শজনে কিনে নিচ্ছে। সেই শজনে পাইকাররা কিনে তা দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করছে।
গত দুই সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত মন শজনে ডাটা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে রপ্তানি হচ্ছে। প্রতি মন শজনে ডাটা পাইকারিভাবে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার থেকে ২৫০০ টাকা পর্যন্ত। উপজেলার বিভিন্ন বাজারে কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৬০/৭০ টাকায়। মৌসুমী ব্যবসায়ীরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছে শজনে ডাটা ব্যবসা করে।
সান্তাহারের রফিক,বাবুল নামে শজনে ব্যবসায়ীরা ডাকঘর নিউজকে বলেন,সান্তাহার থেকে প্রায় কোটি টাকার শজনে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত্রে ট্রেন ও ট্রাকে করে ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে যাচ্ছে। শফিক নামে একজন শজনে চাষী ডাকঘর নিউজকে বলেন রাইখঞ্জন নামে শজনে বছরের প্রায় সারাসময়ই পাওয়া যায়। চাষীরা এখনই শজনের ডাল এলাকায় পথের ধারে থেকে শুরু করে বিভন্ন এলাকায় রোপণ করছে।
সান্তাহারের শজনে ব্যবসায়ী দুদু মিঞা ডাকঘর নিউজকে বলেন, বাম্পার ফলনের আশায় এবারেও আগে থেকে বেশকিছু গাছ কিনে রেখেছি। যেসব গাছে ফুল বেশি সেসব গাাছই কিনেছি। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় আয় ভাল হবে বলে আশা করছি।
সান্তাহার রথবাড়ি বাসিন্দা রাজ ডাকঘর নিউজকে বলেন আমার সাতটা শজনে গাছ আছে। প্রচুর শজনে আছে গাছে। কয়েকটা গাছের শজনে বিক্রি করেছি। বাকীগুলোরও আশা করছি ভাল দাম পাব।
সান্তাহারের একটি কলেজের উদ্ভিদ বিদ্যা বিভাগের শিক্ষক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান ডাকঘর নিউজকে বলেন,শজনেতে ক্যালসিয়াম,খনিজ লবন,আয়রণসহ প্রটিন ও শর্করা জাতীয় খাদ্য রয়েছে। তাই এটিকে ’পুষ্টির ডিনমাইট’ হিসেবে আখ্যায়িত করা যায়।
আদমদীঘি উপজেলা কৃষি অফিসার মিঠু চন্দ্র অধিকারী ডাকঘর নিউজকে বলেন,আদমদীঘি ও সান্তাহারের মাটি ও আবহাওয়া শজনে চাষের জন্য উপযোগী। এখানে বাণিজ্যিকভাবে শজনে চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার সুযোগ রয়েছে। ফলে শজনে চাষে আগ্রহ বাড়ছে। এ বছর ১৬০ হেঃ মেট্রেক টন শজনে চাষ হয়েছে। যার আনুমানিক মুল্য প্রায় ১২ কোটি টাকা।