এপ্রিল ২৯, ২০২৫ ১:৫৪ পূর্বাহ্ণ
মঙ্গলবার, ২৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অবশেষে বৃষ্টির পরশে প্রাণ ফিরে পেল আদমদীঘির জনজীবন ও কৃষি মাঠ

দীর্ঘ খরার পর বগুড়ার আদমদীঘিতে অবশেষে স্বস্তির বৃষ্টি নেমেছে। বৈশাখের ভরদুপুরে হঠাৎ নেমে আসা এই বৃষ্টিতে খরতাপে দগ্ধ জনজীবনে ফিরে এসেছে প্রশান্তি। প্রাণীকুল, কৃষি ও কর্মজীবী মানুষের মধ্যে বইছে স্বস্তির হাওয়া।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা প্রচণ্ড তাপদাহে উপজেলার মাটি ফেটে গিয়েছিল। মাঠের পর মাঠে শুষ্কতা, ফসলের জন্য পানির হাহাকার এবং কৃষকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ—সব মিলিয়ে এক দুঃসহ পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। বিশেষ করে বোরো ধানের জন্য দুশ্চিন্তায় ছিলেন উপজেলার হাজারো কৃষক।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুর থেকে উপজেলার সর্বত্র শুরু হয় মনোরম বর্ষণ। আকাশে কালো মেঘ জমতেই মাঠের কৃষকদের চোখে জেগে ওঠে আশার আলো। হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিতে প্রথমেই প্রশান্তি মেলে, পরে তা পরিণত হয় একটানা বর্ষণে। অনেকেই খুশিতে ভিজে যান বৃষ্টিতে।

সান্তাহার ইউনিয়নের কলসা রথবাড়ি মাঠে কাজ করছিলেন কৃষক কছির উদ্দীন। তিনি ডাকঘর নিউজকে বলেন, “অনেক দিন পর এই বৃষ্টি পেলাম। জমি শুকিয়ে গিয়েছিল, চড়া দামে শ্যালো মেশিন ভাড়া করে জমিতে পানি দিতে হয়েছিল। এখন বৃষ্টিতে সেই খরচটা আর করতে হবে না। তাছাড়া প্রাকৃতিক বৃষ্টির মতো উপকার কিছুই দিতে পারে না।”y

আদমদীঘি সদর ইউনিয়নের কৃষক সাইদুর রহমান ডাকঘর নিউজকে জানান, “বৃষ্টি আসুক এই প্রার্থনায় অনেকে নামাজও পড়েছে। বোরো ধানই আমাদের পরিবারের ভরসা। এই বৃষ্টিতে ধান রক্ষা পেল, আমাদের বাঁচানো হলো।”

উপজেলা কৃষি অফিসার মিঠু চন্দ্র অধিকারী ডাকঘর নিউজকে বলেন, “অনাবৃষ্টির কারণে কৃষকরা কিছুটা বিপদে পড়েছিলেন। কিন্তু গতকাল থেকে যে বৃষ্টি হচ্ছে, তা বোরো আবাদসহ অন্যান্য ফসলের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। ইতোমধ্যে ৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।”

তিনি আরও জানান, চলতি মৌসুমে আদমদীঘি উপজেলায় ১২,৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

একটানা বৃষ্টিতে মাঠের চিত্র এখন বদলে গেছে। আগের মাটি ফাটার জায়গায় এখন জমে আছে জলধারা, বাতাসে মাটির গন্ধ আর কৃষকের মুখে ফুটে উঠেছে দীর্ঘ প্রতীক্ষার হাসি।

এই বিভাগের সর্বশেষ